শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : গত ২৪ ঘণ্টা দেশে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এর মধ্যে ২৭ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এ নিয়ে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৩০৫ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে নতুন করে ৪ হাজার ৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৯৮ হাজার ৮৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯২৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন।
বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মোট ৬১ টি ল্যাবে বর্তমানে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় মোট ১৮ হাজার ৯৬২ টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ হাজার ৫২৭ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫ লাখ ৫১ হাজার ২৪৪ টি।
নমুনা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৮৬২ ও মারা যায় ৫৩ জন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করে। ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম কোনও করোনা রোগী মারা যায়।
দেশে গত ২৮ এপ্রিল করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৫৪৯ জন। এর পর ধারবাহিকভাবে বাড়তে থাকে শনাক্তের সংখ্যা। চলতি মাসের ১ জুন ২,৩৮১, ২ জুন ২,৯১১, ৩ জুন ২৬৯৫, ৪ জুন ২৪২৩, ৫ জুন ২,৮২৮, ৬ জুন ২,৬৩৫, ৭ জুন ২,৭৪৩, ৮ জুন ২,৭৩৫, ৯ জুন ৩,১৭১ জন, ১০ জুন ৩,১৯০, ১১ জুন ৩, ১৮৭, ১২ জুন ৩,৪৭১ ও ১৩ জুন ২,৮৫৬, ১৪ জুন ৩১৪১, ১৫ জুন ৩০৯৯ ও ১৬ জুন ৩,৮৬২ জন শনাক্ত হয়।
বিশ্ব পরিস্থিতি
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (১৭ জুন) সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৯ জনে।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ লাখ ৫২ হাজার ৮৮৫ জন।
জেএইচইউ এর তথ্য অনুসারে, বুধবার পর্যন্ত ব্রাজিল ও রাশিয়া যথাক্রমে ৯ লাখ ২৩ হাজার ১৮৯ জন এবং ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৭২৫ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে।
রাশিয়ার পর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষের।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত যুক্তরাষ্ট্রে বুধবার পর্যন্ত ২১ লাখেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯১৭ জনের।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পর করোনাভাইরাসে মৃতের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৪৩ জন।
চীনা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সোমবার (১৫ জুন) জানায়, দেশটিতে রোববার (১৪ জুন) নতুন করে আবারও ৪৯ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৩৯ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছে। তবে সেখানে নতুন কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২১৩টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও’র অভিনন্দন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসায় মৌলিক স্টেরয়েড ব্যবহারে ‘জীবনরক্ষায় বৈজ্ঞানিক ব্যাপক সাফল্য’ অর্জনের জন্য মঙ্গলবার (১৬ জুন) ব্রিটেনকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এ ওষুধ ব্যবহার করা গুরুতর রোগীদের এক-তৃতীয়াংশ প্রাণে বেঁচে গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস আধানোম গ্রেব্রেয়েসাস বলেন, ‘এটি একটি বড় খবর। আমি যুক্তরাজ্য সরকার, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং জীবনরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত এই ব্যাপক সাফল্য অর্জনে অবদান রাখা বিভিন্ন হাসপাতাল ও রোগীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ওষুধ করোনার চিকিৎসায় গুরুত্বর অসুস্থ রোগীদের জীবন রক্ষা করতে সক্ষম। মূলত: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যেসব রোগীর ভেন্টিলেশন ও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, সেসব রোগীর জীবন বাঁচাতে এ ওষুধ অত্যন্ত কার্যকর। এটা এক ধরনের স্টেরয়েড। তবে করোনার মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য কোন কার্যকর চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি।